নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন

জন্ম নিবন্ধন সনদ হচ্ছে একজন ব্যক্তির বাংলাদেশের নাগরিকত্বের প্রথম রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং একজন বাংলাদেশী হিসেবে আপনি এই তথ্যটি আইনগতভাবে সরকারিভাবে সরকারি সকল খাতায় লিপিবদ্ধ করাকে বলা হয় জন্ম নিবন্ধন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন 2004 সালের প্রত্যেক বাংলাদেশী নাগরিকের অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং এই মুহূর্তে একজন বাংলাদেশী হিসেবে আপনাকে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার এবং কিভাবে অনলাইনে আবেদন করবেন সে সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন।

অনেকেই রয়েছেন যারা না বুঝে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করে ফেললে বা নিবন্ধন আবেদনে কোন প্রকার ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে তা নিয়ে পরবর্তীতে সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই সঠিক নিয়মে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা উচিত আজ আমরা আপনাদের সেই সঠিক নিয়মটি শেয়ার করব এবং আপনি অবশ্যই আমাদের এই নিয়মটি ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন।

নতুন জন্ম নিবন্ধনের আবেদন

অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট রয়েছে সেই ওয়েব সাইটে যেতে হয় আমরা আপনাদের উদ্দেশ্যে সে ওয়েবসাইটের লিংক https://bdris.gov.bd/br/application এখানে প্রবেশ করুন। অতঃপর আপনি যে ঠিকানায় আবেদন করবেন সেটা টিক মার্ক করে পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন ফরম আপনার সামনে প্রদর্শিত হবে সেখানে আপনার নাম জন্ম তারিখ পিতা মাতার নাম ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য সঠিকভাবে আবেদন করুন।।

birth-certificate-application

নিবন্ধনাধীন ব্যক্তির তথ্য প্রদান

যার জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা হবে তার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য প্রদান করতে হয় এখানে বেশ বড় একটি ফরম পূরণ করার প্রয়োজন রয়েছে যার কারণে নিবন্ধনের দিন ব্যক্তির প্রথম এবং শেষ অংশ বাংলা ও ইংরেজিতে সঠিকভাবে লিখতে হয়।

জন্ম তারিখ সঠিকভাবে লিখুন জন্ম তারিখের ঘরে ক্লিক করলে ক্যালেন্ডার হতে জন্মের দিন সাল ও মাস বাছাই করে অপশন পেয়ে যাবেন জন্ম তারিখ ইনপুট করার সময় একটি নোটিশ দেখতে পাবেন বয়সের উপর ভিত্তি করে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে তার সকল তথ্য সেখানে উল্লেখ করা হয়।

পরিবারের কততম সন্তান এবং পুরুষ না মহিলা তা নির্বাচন করার পর জন্ম স্থানে সঠিক ঠিকানা লিখতে হবে ঠিকানা বাছাই করার ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে আপনার বিভাগ জেলা উপজেলা ইউনিয়ন গ্রামের নাম পারা মওলা এমন করে আপনার বাসার হোল্ডিং নাম্বার পর্যন্ত লিখতে হবে।

অন্যদিকে আপনি যদি এই গ্রাম এলাকায় বসবাস করে থাকেন তাহলে আপনি আপনার বাসা নাম্বার জেনে থাকেন তাহলে দেশ চিহ্ন বসিয়ে দিতে পারেন ফর্মটি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করা হয়ে গেলে পরবর্তী অপশনে প্রবেশ করুন।

পিতা মাতার তথ্য

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য প্রথমেই আপনাকে নিজের তথ্য দেওয়ার পরবর্তী ধাপে আপনাকে পিতা-মাতা তথ্য প্রদান করতে হবে। পিতার অনলাইনে যে জন্ম নিবন্ধন নাম্বার রয়েছে সেটি যদি আপনার কাছে থাকে তাহলে সে টেলিকন পিতার নাম বাংলা এবং ইংরেজিতে বড় হাতের অক্ষরে লিখতে হবে। অন্যদিকে পিতা জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার যদিও এটি অপশনাল তবে থাকলে সেই তথ্যটি দিয়ে পূরণ করুন।

অন্যদিকে ঠিক একইভাবে মাতার ঘরে মাতার নাম বাংলা ও ইংরেজি দুইটি ভাষাতে লিখুন এবং মাতা সতের যে অনলাইন ভিত্তিক জন্ম নিবন্ধন নাম্বার রয়েছে সেটি লিখুন অথবা আইডি কার্ড থাকলে সেই আইডি কার্ডের নাম্বার লিখে ফরম পূরণ সম্পন্ন করুন।

বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা তথ্য প্রদান

আবেদনের শুরুতে জন্মস্থানের ঠিকানা প্রদান করা হয়েছে এখন বর্তমানেও স্থায়ী ঠিকানা লিখার জন্য উপরের অংশে আমরা যে নির্দেশনা দিয়েছি সেটার ভিত্তিতে আপনাকে কোনোটিই নয় অপশন বাছাই করতে হবে।

এখন আপনার সামনে নতুন একটি ঠিকানা লেখার অপশন আসবে সেখানে সঠিক তথ্য দিন আপনার প্রথমে জন্মস্থানের ঠিকানা যেটি দেওয়া হয়েছিল সেটি সঠিকভাবে লিখুন।

বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা যদি একই হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে স্থায়ী ঠিকানাও বর্তমান ঠিকানা টিক মার্ক করে দিলে অটোমেটিক বর্তমানে অস্থায়ী ঠিকানা একই হয়ে যাবে।

অন্যদিকে ঠিকানা ভিন্ন ভিন্ন হলে আপনি নিজে থেকে পর্যায়ক্রমে দেশ বিভাগ জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ও পৌরসভা এইভাবে বাছাই করে সঠিক ভাবে আপনার ঠিকানা লিখুন।

আবেদনকারীর তথ্য

যিনি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করছেন তার তথ্য সঠিকভাবে দিতে হবে সাধারণত একটি শিশুর জন্ম নিবন্ধনের জন্য দায়ী ব্যক্তি হচ্ছেন তার পিতা মাতা পিতামহ পিতামহী মতামতাময় ও আইনগত সকল অভিভাবক। সুতরাং একটি শিশুর জন্ম নিবন্ধনের আবেদন শুধুমাত্র তারাই করতে পারবেন তাছাড়া আপনি নিজে নিজে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে নিজে থেকে আবেদন করতে চাইলে অবশ্যই আবেদন করার শুরুতে নিজে আবেদন করছেন এটি বাছাই করুন।

আবেদনকারী একটি সচল মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে হবে এবং আবেদন সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের আপডেট এই মোবাইল নাম্বারে মেসেজের মাধ্যমে প্রদান করা হয় আপনি চাইলে একটি ইমেইল এড্রেস বসাতে পারেন যদিও এটি অপশনাল একটি বিষয়।

ডকুমেন্টস আপলোড করুন

আপনার আবেদন সম্পন্ন হয়ে থাকলে আবেদনের শেষ ধাপে ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র আপলোড করতে হবে ছোট বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করার সময় তার টীকা কার্ডে স্ক্যান কপি অথবা জমি বা বাড়ির ট্যাক্স প্রদানের রশিদ আপলোড করতে হয়। অন্যদিকে আপনি চাইলে একাধিক ফাইল সংযোজন করতে পারেন তবে প্রত্যেকটি ফাইলের সাইজ 100 কিলোবাইটের কম হতে হবে।

আবেদনের শেষের ধাপে ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র আপলোড করতে হবে। ছোট বাচ্চার জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করার ক্ষেত্রে টিকা কার্ডের স্কেন কপি অথবা জমি বা বাড়ির টেক্স প্রদানের রশিদ আপলোড করতে হবে।

আবেদন পত্র প্রিন্ট

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সম্পূর্ণ হয়ে থাকলে আবেদন পত্রটি প্রিন্ট করে নিতে পারেন অথবা আবেদনপত্র প্রিন্ট করা আপনার জন্য আবশ্যিক নয়। তবে অনলাইনে আবেদন করার পর আপনাকে একটি নাম্বার দেয়া হবে সেই নাম্বারটি অবশ্যই সংগ্রহ করে রাখবেন। আবেদন করার ১৫ দিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ অথবা পৌরসভা থেকে জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করতে পারবেন।

উপরের অংশে আপনাদের জন্য যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেটি অবশ্যই সঠিকভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করুন আমরা মনে করি একজন ব্যক্তি চাইলে এটার ভিত্তিতে অনলাইন থেকে আবেদন করতে পারছেন। জন্ম নিবন্ধন সম্পর্কে কোন ধরনের জটিলতা থেকে থাকলে আমরা অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করার জন্য সর্বদা চেষ্টা করব।

Leave a comment